জুয়েল রুহানী:
মুক্তিরও মন্দিরও সোপানও তলে
কত প্রাণ হলো বলিদান
লেখা আছে অশ্রু জলে…..।
মুক্তিকামী বাঙ্গালী জাতি এ দেশের আকাশে বাতাসে বিজয়ের বাণী ছড়িয়ে দিতে মেতেছিল রণক্ষেত্রে রক্তের খেলা খেলতে। স্বার্থ ভূলে নিঃস্বার্থভাবে বাবা-মায়ের স্নেহ-মমতা বিসর্জন দিয়ে রণক্ষেত্রে ছুটে গিয়েছিল একটি সোনার বাংলাদেশ দেখতে। বাংলাদের বুকে যখন চরম বিপর্যয় নেমে এসেছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, মানবিক সমস্ত দিকে যখন শাসকগোষ্ঠি বাঙ্গালি জাতিকে নিষ্পেষিত করতে চেয়েছিল ঠিক তখনি এ দেশের সর্বস্তরের জনতা প্রতিবাদের ঝড় তুলে, আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে “বাঙ্গালী জাতি” পরিচয়ের অনুপ্রেরণা নিয়ে।
বাংলাদেশ যতদিন রবে ইতিহাসের সোনালী পাতায় চির স্বরণীয় বরনীয় হয়ে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল এ দেশের সর্বস্তরের জনতার লড়াই। বাঙ্গালী জাতির উপর যখন পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় তখন সর্বস্তরের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙ্গালী জাতির পরিচয় বহন করে প্রতিবাদের ঢাল ধরে রক্ত বন্যা বইয়ে দেয়। কামার-কুমার, জেলে, তাতী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবি, ডাক্তার, প্রকৌশলী মাথার ঘাম পায়ে ফেলা খেটে খাওয়া শ্রমিক জনতা সকলেই লড়েছিল বাঁচতে ও বাঁচাতে। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি দিক দিয়ে যখন একটি জাতিকে পঙ্গুত্ব করে রাখা হয়, তখন একটি জাতির বাঁচার কিই বা থাকে? এমন কি মায়ের মুখের ভাষাটুকু রুদ্ধ করার জন্যও শাসকগোষ্ঠী ছিল বদ্ধ পরিকর! সবকিছু হারিয়ে বাঙ্গালী জাতি যখন নিঃস্ব তখন মার্তৃভূমি ও মার্তৃভাষা কে বাঁচানোর জন্যই মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এ দেশের সর্বস্তরের জনতা।
এ দেসের সর্বস্তরের জনতা বাবা-মায়ের স্নেহ-মমতা, ভাই-বোনের ভালোবাসা, স্ত্রী-সন্তানের মায়া বিসর্জন দিয়ে মার্তৃভূমির জন্য অকপটে স্বীকার করেছেন মৃত্যুযন্ত্রনা! বাঙ্গালী জাতিকে বাঁচানোর জন্য। আর তাইতো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ সন্তানহারা বাবা-মায়ের আর্তনাদ, সম্ভ্রমহারা মা-বোনের চোঁখে নীরবতার ছাঁপ হার মানিয়েছে সবকিছুকে।
সর্বপরি এ দেশের সর্বস্তরের জনতা নিঃস্বার্থভাবে বাংলা মায়ের সবুজ আঁচলে বুকের তাজা টক্ টকে রক্ত ঢেলে বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে উড়িয়ে দিয়েছে বিজয় নিশান। যা বাঙ্গালী জাতির গর্বের প্রতীক রুপে চির ভাস্বর হয়ে আছে বিশ্ব মানচিত্রে।
জুয়েল রুহানী, কবি ও লেখক, লালমনিরহাট।
(সাপ্তাহিক আলোর মনির সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, সাপ্তাহিক আলোর মনি কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার সাপ্তাহিক আলোর মনি নেবে না।)